ফিটকিরির ২০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম
ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আপনি যদি সঠিক তথ্য জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু মাত্র আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলে ফিটকিরির সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রিয় পাঠক, আমরা তো অনেকেই সেলুনে ফিটকিরির ব্যবহার দেখেছি কিন্তু এই ফিটকারির গুণগত এর উপকারিতাই বা কি এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সঠিক তথ্য জানা নেই। কিন্তু আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়েন, তাহলে এই ফিটকিরি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।.
ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা
দাড়ি সেপের পরে কিংবা রূপচর্চা সহ বিভিন্ন কাজে ফিটকিরির ব্যবহার হয়ে আসছে বহু কাল ধরে। কেননা এটিতে বিদ্যমান রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান। যার ফলে এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এবং অন্যান্য সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ফিটকারি মূলত একটি রাসায়নিক যৌগ। এর রাসায়নিক নাম হল পটাশ অ্যালাম। এটি অ্যালুমিনিয়াম সালফেট ও পটাশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরি এক প্রাকার প্রাকৃতিক লবণ। এটি দেখতে শুভ্র সাদা রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফিটকিরি প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উভয় ভাবেই তৈরি হয়ে থাকে। বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে বহু শতাব্দী ধরে এটি আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ফিটিকিরি।
পানি জীবানু মুক্ত করতে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে, রূপচর্চা সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই ফিটকিরি। আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এই ফিটকিরির ব্যবহারের নিয়ম সহ বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে পারবেন। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে বিস্তারিত তথ্য জানতে আজকের প্রতিবেদনটি পড়ুন।
আজকের আর্টিকেলে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রথমে এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
ফিটকিারির উপকারিতা
- পানি জীবাণুমুক্ত করে;
- মুখের দুর্গন্ধ দূর করে;
- বগলের দুর্গন্ধ দূর করে;
- ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে;
- পায়ের গন্ধ দূর করা;
- মুখের ঘা দূর করে;
- গলা ব্যথা এবং ইনফেকশন দূর করে;
- ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধে করে;
- রক্তপাত বন্ধ করে;
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করে;
- দাঁতের রক্তপাত বন্ধ করে;
- দাঁতের মাড়ি মজবুত করে;
- ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে;
- ত্বকের কাচে দাগ দূর করা;
- ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে;
- ব্রণের সমস্যা দূর করে;
- চুল পড়া রোধ করে;
- আফটার শেভ লোশনের কাজ করে;
- কাপড়ের রং স্থায়ী;
- চামড়া প্রক্রিয়া করণে ব্যবহৃত হয়;
- এগুলোই মূলত ফিটকিারির উপকারিতা।
ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম
ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি ফিটকিরি থেকে এর সম্পূর্ণ উপকারিতা বা গুণাগুণ আপনি পেতে চান, তাহলে আপনাকে সঠিক নিয়ম মেনে ফিটকিরির ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই এর গুণাগুণ গুল আপনি পাবেন।
পানি জীবাণুমুক্ত করে: পানি জীবাণুমুক্ত করতে ফিটকিরির ব্যবহার বহু যুগের। আপনি যদি আপনার প্রতিদিনের পান করা পানি জীবাণুমুক্ত করে পান উপযোগী করতে চান, তাহলে ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন।
- এর জন্য আপনাকে প্রথমে পানি ভালো মতো ফুটিয়ে নিতে হবে।
- এরপরে এক চিমটি পরিমাণ ফিটকারি পানির মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে।
- এতে করে ফিটকিরি ময়লা ও ক্ষুদ্র কণা জমাট বাঁধিয়ে ফেলবে।
- এতে করে পানি পরিষ্কার ও জীবাণু মুক্ত হবে।
- এবার এই পানি আপনি নিশ্চিন্তে পান করতে পারেন।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: মুখের দুর্গন্ধ একটি অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর একটি সমস্যা। কেননা মুখে দুর্গন্ধের জন্যে অন্যকারো সামনে কথা বলতে খুবই বিব্রতকর সমস্যায় পড়তে হয়। আর এ ধরনের সমস্যা নিমিষেই দূর করে দিতে পারে ফিটকিরি।
- এর জন্য আপনাকে প্রথমে এ গ্লাস পরিমাণ গরম নিতে হবে।
- এরপরে এক চিমটি পরিমাণ ফিটকিরি ও সম পরিমাণ শিলা লবণ বা রক সল্ট পানিতে দিতে হবে।
- এরপরে পানির সাথে উপাদান দুটিকে ভালো মতো মিশ্রণ করে নিতে হবে।
- এরপরে পানি দিয়ে ভালো করে কুলকুচি করতে হবে।
- এতে করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে নিঃশ্বাসে ফিরবে সজিবতা।
- তবে কুলকুচির করার সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
- কেননা পানি গিলে ফেললে বমি বা অন্য সমস্যা ও হতে পারে।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে: ঘামের দুর্গন্ধের জন্য বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আর আপনি যদি এ সমস্যার সম্মূখীন হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি ব্যবহার করতে পানের ফিটকিরির মতো প্রাকৃতিক উপাদান। যা ঘামের ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করে থাকে। এতে করে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
- শরীর থেকে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য প্রথমে পানিতে ফিটকিরি ভিজিয়ে রাখতে হবে।
- এরপরে শরীরের যেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, সেই স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
- এরপরে কিচ্ছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে ফিটকারি শুকানোর জন্য।
- এরপরে ভালো মতো ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে শরীর থেকে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
বগলের দুর্গন্ধ দূর করে: অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এই দুর্গন্ধ সৃষ্টির জন্য অন্যতম দায়ী হল বগল ঘামানো। আর এই দুর্গন্ধ নিয়ে পড়তে বিব্রতকর অবস্থায়। আর এ সমস্যা দূর করতে পারে ফিটকারি। এরজন্য গোসলের পরে ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে বগলে ঘষে নিতে হবে।
এতে করে বগলের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। সেই সাথে বগলের কালচে ভাবও দূর হয়ে যাবে। সুতরাং আপনি যদি বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে চান এবং একই সাথে বগলের কালোদাগ দূর করতে চান, তাহলে নিয়মিত গোসলের পরে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না।
পায়ের গন্ধ দূর করা: জুতা ব্যবহার করলে বা এমনিতেই যদি আপনার পায়ের দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। তা খুবই একটি অস্বস্তিকর ব্যাপার। আর আপনি যদি এসমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে ফিটকারির ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার পায়ের বিশ্রী দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে সহজেই।
পায়ের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য প্রথমে গরম পানি নিতে হবে। এরপরে পানিতে পরিমান মতো ফিটকিরি মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপরে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর ফলে আপনার ব্যাক্টেরিয়া গুলো দূর হয়ে যাবে। ফলে পায়ের দুর্গন্ধ ও দূর হয়ে যাবে নিমিষেই।
মুখের ঘা দূর করে: মুখের ঘা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে এই ফিটকিরি। সুতরাং মুখে ঘা হলে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। এতে জ্বালা পোড়া হতে পারে। কিন্তু মুখের ঘা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে। ফলে আপনি সুস্থ্য হবেন দ্রুতই।
গলা ব্যথা এবং ইনফেকশন দূর করে: আপনি যদি গলা ব্যাথা বা গলার ইনফেকশনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন ফিটকিরি। গলা ব্যথা ও ইনফেকশন দূর করার জন্য গরম পানিতে ফিটকিরি মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপরে কুলকুচি বা গড় গড় করে নিতে হবে । এতে করে আপনার এ সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
রক্তপাত বন্ধ করে: ফিটকিরি দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে সহায়তা করে থাকে। শরীরের কোনো স্থানে কেটে গেলে দ্রুত ফিটকারি পানিতে ভিজিয়ে ক্ষত স্থানে ব্যবহার করতে হবে। এতে করে আপনার ক্ষত স্থানের রক্ত পড়া দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সাথে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করে: দ্রুত নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করতে ফিটকিরি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এরজন্য আপনাকে একটি তুলার বল প্রথমে বরফ পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে। এরপরে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি ছিটিয়ে নিয়ে বলটি নাকের ছিদ্রে চেয়ে ধরতে হবে। এতে করে আপনার নাক দিয়ে রক্ত পড়া দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু নাকের দুই ছিদ্র এক সাথে বন্ধ করবেন না।
দাঁতের রক্তপাত বন্ধ করে: বিভিন্ন কারনে আমাদের দাঁতের ফাঁক দিয়ে রক্ত পাত হয়ে থাকে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আপনি যদি এ সমস্যা নিমিষেই দূর করতে চান, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন ফিটকিরি। এতে করে আপনার দাঁতের রক্তপাত দ্রুতই বন্ধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন।
এরজন্য আপনাকে একগ্রাম ফিটকিরি, এক চিমটি শিলা লবণ এবং দারুচিনি ভালো মতো মিশ্রণ করে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এই পেস্টটি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে আলতো ভাবে মাড়িতে ম্যাসাজ করতে হবে এবং কুলকুচি করে পানি ফেলে দিতে হবে। এতে করে এ সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
দাঁতের মাড়ি মজবুত করে: দাঁতের মাড়ি মজবুত ও বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে নিয়মিত উপরে বর্ণিত পেস্টটি ব্যবহার করে কুলকুচি করতে পারেন। এতে করে আপনার দাঁতের মাড়ির আগের থেকে আরও বেশি শক্তিশালী ও মুজবুত হবে।
চুল পড়া রোধ করে: আপনি যদি চুল পড়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি চাইলে ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার এ সমস্যা দূর হয়ে যাবে। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আপনাকে ফিটকিরি মিশ্রিত পানি চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে হবে। এতে করে মাথার ত্বক পরিষ্কার হবে এবং চুল পাড়া রোধ হয়ে যাবে।
কাপড়ের রং স্থায়ী: ফিটকিরি কাপড়ের রং স্থায়ী করতে সহায়তা করে থাকে। এর জন্য আপনার ডিটারজেন্টের সাথে সামান্য পরিমান ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার কাপড়ের রঙ স্থায়ী থাকবে।
চামড়া প্রক্রিয়া করণে ব্যবহৃত হয়: ফিকটিরি চমড়া নরম ও প্রক্রিয়াজাত করণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি চামড়ার স্বায়ীত্ব বৃদ্ধ করে।
ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করে: ফ্রিজে বিভিন কারনেই দুর্গ্ধের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারেন ফিটকিরি। এতে করে আপনার ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
মুখে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম
ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে: ফিটকিরি ত্বকের টান টান ভাব বজায় রাখতে সহায়তা করে থাকে। নিয়মিত প্রতিদিন ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক টান টান থাকবে এবং একই সাথে ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি আপনার ত্বকের টান টান ভাব ধরে রাখতে চান, তাহলে ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বকের কাচে দাগ দূর করা: ত্বকের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ দ্রুত দূর করতে সহায়তা করে থাকে ফিটকিরি। এমনকি বগল বা অন্যান্য স্থানেরও কালো দাগ দূর করে থাকে। এর জন্য নিয়মিত প্রতদিন ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ত্বকের কালচে দাগ দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে: আপনি নিয়মিত প্রতিদিন ফিটকারি পানিতে ভিজিয়ে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে আদ্রতা ফিরে আসবে। কেননা ফিটকিরি মিশ্রিত পানি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে থাকে। ফলে ত্বকে আদ্রতা ফিরে আসে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধে করে: ফিটকারি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধে করতে সহায়তা করে থাকে। নিয়মিত ফিটকিরির ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের চুলকানি বা অন্যান্য সমস্যাও দূর হয়ে যায়।
আফটার শেভ লোশনের কাজ করে: শেভ করার পরে আপনি চাইলে ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনি আফটার শেভ লোশনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক থাকবে সুরক্ষিত। মুখে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম এগুলোই।
ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
ফিটকিরি ত্বকের ব্রণ, ব্রণের দাগ এবং বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি দূর করতে বিশেষ সহায়তা করে থাকে। কেননা ফিটকিরি প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি আপনার ত্বকের ব্রণ দূর করতে চান, তাহলে নিয়মিত ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এটিই ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়।
ফিটকিরির ক্ষতিকর দিক
ফিটকিরির নানাবিদ উপকারিতা থাকে সত্ত্বেও এর বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তাই ফিটকিরি ব্যবহারের সময় সচেতন থাকতে হবে এবং অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ফিটকিরির ক্ষতিকর দিক গুলো হল-
- অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- ফিটকিরি যেমন ত্বকের শুষ্কতা দূর করে আদ্রতা ফিরিয়ে আনে, আবার অধিক ব্যবহারে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
- ফিটকিরি কোনো ভাবে পেটে গেলে পেট ব্যথা, বমি বা ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- ফিটকিরির গুড়া শ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের সমস্যা ও এলার্জীর সমস্যা হতে পারে।
- সরাসরি চোখে ফিটকিরি গেলে চোখ জ্বালপোড়া, লালচে ভাব সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে কিডনির সমস্যা হতে পারে। কেননা এর প্রভাবে শরীর থেকে টক্সিন বের হতে পারেনা। ফলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
- ফিটকিরি দীর্ঘদিন ব্যবহার করল শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে যায়। ফলে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা হতে পারে।
- পানি অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করে তা পান করলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
- শিশুদের ভুলেও ফিটকিরি ব্যবহার করানো যাবেনা।
- অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার করলে প্রজনন ক্ষমতার উপরে কু প্রভাব পড়ে।
পানিতে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম
ইতিমধ্যে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। এখন আপনি যদি ফিটকিরির মাধ্যমে পানি পরিশোধ করতে চান, তাহলে সঠিক ভাবে তা সম্পূর্ণ করতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। পানিতে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম গুলো হল-
- আপনি যদি ১০ লিটার পানি জীবাণুমুক্ত করতে চান, তাহলে ১-২ গ্রাম ফিটকিরিই যথেষ্ঠ।
- প্রথমে আপনাকে ১০ লিটার পানি নিতে হবে।
- এরপরে ১-২ গ্রাম ফিটকিরি নিতে হবে।
- এরপরে উপাদান দুটো ভালো মতো মিশ্রণ করতে হবে।
- এরপরে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
- এতে করে এসময়ের মধ্যে পানিতে থাকা জীবাণু ও ময়লা জমাট বাঁধতে শুরু করবে এবং সেগুলো পাত্রের নিচে তলানি জমবে।
- এরপরে পানি গুলো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছঁকে আলাদা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে।
- পানি আরও বেশি নিরাপদ করার জন্য তা ফুটিয়ে নিতে পারেন।
- এবার পানি পান করার জন্য নিরাপদ।
ফিটকিরির দাম কত
ইতিমধ্যে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। ফিটকিরি বিভিন্ন ভাবে বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায়। প্রতি সাবানের মতো একটি ফিটকিরি প্যাকেটের দাম ৩০-৫০ টাকা লাগতে পারে। আর প্রতি ৫০০ গ্রাম ফিটকিরি দাম প্রায় ১০০ টাকা। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, ফিটকিরির দাম কত এ সম্পর্কে।
ফিটকিরির পানি দিয়ে মুখ ধুলে কি হয়?
ফিটকিরির পানি দিয়ে মুখ ধুলে কি হয় এ সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন, এর উত্তর হল- ফিটকিরির পানি দিয়ে মুখ ধুলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়, ব্রণ দূর হয়, কালচে ভাব দূর করে ত্বককে পরিষ্কার করে।
ফিটকিরি কিভাবে মুখে লাগাতে হয়?
ফিটকিরি কিভাবে মুখে লাগাতে হয় এ সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন, এর উত্তর হল- ফিটকিরি মুখে ব্যবহার করার জন্য ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে তারপরে ব্যবহার করতে হবে।
ফিটকিরি পানি খেলে কি কোন ক্ষতি হয়?
ফিটকিরি পানি খেলে কি কোন ক্ষতি হয়- হ্যাঁ। আপনি যদি অতিরিক্ত ফিটকিরি মিশ্রিত পানি পান করেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি হতে পারে।
ফিটকিরি মুখে মাখলে কি হয়?
ফিটকিরি মুখে মাখলে কি হয় এ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে আর্টিকেলের উপরের অংশে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। অনুগ্রহ করে পড়ে নিবেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ইতিমধ্যে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা , ফিটকিরির ব্যবহারের বিভিন্ন নিয়ম সহ ফিটকিরির সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।। সুতরাং আপনি যদি উপরোক্ত সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে নিয়মিত ফিটকিরির ব্যবহার করতে পারেন।
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়ে থাকলে, অনুগ্রহ করে শেয়ার করুন। সেই সাথে নিত্য নতুন বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট www.kanon24.com নিয়মিত ভিজিট করুন। আর এতোক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;
comment url