ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় এবং করণীয় সমূহ

প্রিয় পাঠক, ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় এবং ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় সম্পর্কে আপনি যদি জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু মাত্র আপনার জন্য।
ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয়
এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন ডি এর সমস্ত উৎস সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং ভিটামিন ডি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

ভূমিকা

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি একটি ভিটামিন। কেননা এই ভিটামিন ডি এর অভাব হলে আমাদের শরীরের হাড় দুর্বল হয়ে যায় যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। যেমন- হাটু ব্যাথা, কোমর সহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যাথা প্রভৃতি।

আর শিশু দের ভিটামিন ডি এর অভাব যদি হয় তাহলে বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি হয়। যেমন- শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাব হলে হাড়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধির পরিবর্তে অনেক সময় বিকৃতি হয়ে যায়। আবার অনেক সময় এই ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেটস রোগ হয়ে থাকে।
এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। যেমন- শরীর অধিক পরিমান ক্লান্তি ভাব থাকে, ত্বকের সমস্যা হয়, চুলের সমস্যাও হয়ে থাকে। এছাড়াও এই ভিটামিন ডি এর অভাবে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হয়ে থাকে। আর এ সব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় এবং ভিটামিন ডি এর লক্ষণ সহ ভিটামিন ডি সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে বিস্তারিত তথ্য গুলো জেনে নিন।

ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ 

ভিটামিন ডি এর অভাবে যে সব রোগ হয়ে থাকে, সেগুলো জানার পূর্বে জেনে নিই ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-
  • হাড় ক্ষয় হয়ে যায়
  • হাড় দুর্বল হয়ে যায়।
  • শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হয়।
  • বিষন্নতা দেখা দেয়।
  • ওজন কমে যায় আবার অনেক সময় বেড়ে যায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
  • হজমের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • ক্লান্তি বোধ বেড়ে যায়।
  • শরীরের বিভিন্ন জোয়েন্টে ব্যথা হয় প্রভৃতি।
  • এগুলো ছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হয়ে থাকে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় 

আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারনে ভিটামিন ডি এর অভাব হয়ে থাকে। যার ফলে বিভিন্ন রকমের রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় তা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল-

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়: ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি ভিটামিন। আর এই ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। এই গুলোর মধ্য অন্যতম হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম রোগ- ব্যাধি সহজে বাসা বাধে।

শরীরের জয়েন্টে ব্যাথা: ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানের জোয়েন্টে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় ।

হাড়ের ক্ষয় বা ফাটল: ভিটামিন ডি এর অভাবে হারের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। যার ফলে হাড় ক্ষয় হয়ে যায়। এমনকি ফাটল ও দেখা দিয়ে থাকে।

ক্লান্তি বোধ: আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায়। যার ফলে নিত্য দিনের কাজের সময় ব্যাঘাত ঘটে থাকে।

চুলের সমস্যা: অতিরিক্ত ভিটামিন ডি এর সমস্যা হলে চুলের স্বাস্থ্যের ও অবনতি ঘটে। যার প্রভাবে অসময়ে মাথার চুল ঝরে যায়। এছাড়াও চুলের বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে।

মানসিক চাপ: ভিটামিন ডি কমে গেলে মানসিক অবসাদ বা মানসিক চাপ দেখা দিয়ে থাকে। যার প্রভাবে মেজাজ সব সময় খিট খিটে হয়ে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন কোন রোগ হয় এ সম্পর্কে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। যেমন- ঝিমুনি ভাব, পেশি ব্যথা প্রভৃতি।

ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয় 

ভিটামিন ডি এর অভাব হলে বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। সেগুলো হল-

ভিটামিন ডি এর অভাব আপনি চাইলে দুই ভাবে দূর করতে পারবেন। এক- প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণের মাধ্যে এবং দুই- ভিটামিন ডি ট্যাবলেট বা ঔষধের মাধ্যমে। আজকের আর্টিকেলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের বিস্তারিত প্রকৃতিক উপায় গুলো নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হল-

ভিটামিন ডি এর উৎস 

আমাদের প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকার যেসব খাবার গ্রহণ করে থাকি এই খাবার গুলোর মধ্যে ভিটামিন ডি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল-

ডিম: ডিমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি রয়েছে। কম খরচে ভিটামিন ডি এর উৎস হল একমাত্র ডিম। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও দ্রুত শক্তি বর্ধক খাবার। তবে ডিমের কুসুমে সর্বাধিক ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই ডিমের কুসুম খেতে ভুলবেন না।

লাল মাংস: সকল প্রকার লাল মাংশে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি রয়েছে। সুতরাং আপনি যদি ভিটামিন ডি অভাব দ্রুত দূর করতে চান, তাহলে নিয়মিত লাল মাংস খেতে পারেন।

দুধ: দুধ ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস গুলোর মধ্যে একটি । এছাড়াও দুগ্ধজাত অন্যান্য খাবারেও প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি রয়েছে।

মাশরুম: মাশরুম বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার গুলোর মধ্যে একটি। শরীরে দ্রুত ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করতে মাশরুম বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সুতরাং ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করতে নিয়মিত মাশরুম খেতে পারেন।

তৈলাক্ত মাছ: সব ধরনের মাছেই ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ। তবে সামুদ্রিক্ত তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ এর পরিমান অত্যন্ত বেশি রয়েছে। একই সাথে রয়েছে ভিটামিন ডি।

ডাল: সব ধরনের ডালে বিদ্যমান রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি। সুতরাং আপনি যদি ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগে থাকেন, তাহলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডাল রাখতে পারেন। এতে করে আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হয়ে যাবে সহজেই।

বাদাম: বাদামে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি রয়েছে। সুতরাং ডিটামিন ডি এর অভাব পূরণের জন্য বাদামও খেতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ, কিডনীর সমস্যা, হৃদরোগের মতো বিভিন্ন জটিল সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে উচ্চ প্রটিন সমৃদ্ধ এসব খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়

প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে, ঠিক তেমনি বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। এই জন্য প্রতিটি খাবারই পরিমান মতো খাওয়া উচিৎ। কেননা অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। তাহলে চলুন জেনে নিই ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়-
অতিরিক্ত পরিমান ভিটামিন ডি খেলে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন- কিডনির সমস্যা হতে পারে, হাইপারক্যালসিয়াম, পেট ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন প্রকার সমস্যা হতে পারে। সুতরাং অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন ডি সেবন/ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে। অন্যথায় মারাক্ত সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে জেনেছেন যে ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় এবং একই সাথে জেনেছেন ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করার উপায় গুলো সম্পর্কে। সুতরাং আপুনি যদি ভিটামিন ডি এর সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে আর্টিকেলে বর্ণিত উপরের অংশে বর্ণিত নিয়ম গুলো মেনে চলতে পারেন।

এতে করে আপনার সমস্যা দ্রুত দূর হয়ে যাবে। আর আপনার সমস্যা যদি মারাক্ত হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে অনুগ্রহ করে পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করুন। আর আর্টিকেলের কোনো তথ্য যদি আপনার কাছে ভুল প্রমাণিত হয়ে থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।

আর আপনি যদি এরকম নিত্য নতুন বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের ওয়েবসাইট www.kanon24.com নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;

comment url