শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পঠক, শসার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ত্বকে শসার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু মাত্র আপনার জন্য।
সেই সাথে আজকের আর্টিকেলে শসা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।.
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসা খুবই উপকারি একটি ফল হলেও আমরা একে সবজি হিসেবে চিনে থাকি। শসা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারি। এটি শরীরের পানিশূণ্যতা দূর করাসহ শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। তাই সুস্থ ও সুন্দর থাকতে আমাদের প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় শসা উচিৎ। শসা বিশেষ করে আমরা সালাদ হিসেবে বেশি খেয়ে থাকি।
আজকের আর্টিকেলে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ শসা সম্পর্কে বিস্তারিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং আপনি যদি শসার উপকারিতা এবং অপকারিতারসহ শসার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়তে পারেন।
শসার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। সেই সাথে রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা। আজকের আর্টিকেলে প্রথমে আলোচনা করব শসার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে-
পানিশূণ্যতা দূর করে: শসা আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা নিমিষেই দূর করতে সহায়তা করে থাকে। মনে করুন আপনি এমন কোনো জাইগায় আছেন, যেখানে তেমন পানির ব্যাবস্থা নেই, তাহলে একটি বড় শসা খেয়ে মিতে পারেন, এতে করে আপনার পানির পিপাসা খুব সহজেই মিটে যাবে।
এছাড়াও বর্তমানে যে ভাবে প্রতিনিয়ত তাপদাহ দিন দিন বেড়ে চলছে। এতে করে আমাদের শরীরে পানি শুন্যতার জন্য বিভিন্ন রোগ রোগ হতে পারে। সুতরাং পানি শূন্যতা রোধ করতে প্রতিদিন একটি করে শসা খেতে পারেন।
শরীরের বিষাক্ততা দূর করে: আমাদের শরীরে অনেক বিষাক্ত পদার্থ থাকে যার ফলে আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের রোগ আমাদের শরীরের বাসা বাঁধে। কিন্ত শসা আমাদের শরীরের যাবতীয় বিষাক্তক পদার্থ বা বর্জ্য নিষ্কাষণ করতে সাহায্য করে থাকে।
সুতরাং আপনি যদি আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দ্রুত দূর করতে চান, তাহলে প্রতিদিন নিয়মিত একটি করে শসা খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীর বিষ মুক্ত থাকবে।
কিডনি ভালো রাখে: আপনি যদি কিডনির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন। কেননা শসা শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ঠিক রাখে। যার ফলে কিডনি সুস্থ ও সতেজ থাকে। এছাড়াও নিয়মিত প্রতিদিন শসা খেলে কিডিনির পাথর দূর হয়ে যায়। শসার উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : শসা ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কেননা এটি আয়ুর্বেদীগুণাগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরেসিনোল ও পিনোরেসিনোল সহ বিভিন্ন উপাদান আছে। যার ফলে জরায়ু, স্তন ও মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমায় ।
আরও পড়ুন: জেনে নিন পাকা কলা খাওয়ার গোপন উপকারিতা।
সুতরাং আপনি যদি ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধিকে দূরে রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এতে করে আপনার ক্যান্সারের ঝঁকি বহুগুণ কমে যাবে।
রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে: শসা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। কেননা এতে থাকা উপাদান আমাদের শরীরের রক্ত চলাচলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং সেই সাথে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যার ফলে আমাদের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: শসা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা নিয়মিত প্রতিদিন শসা খেলে রক্ত সুগারের পরিমান কমে যায়। এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি আপনার সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: নিয়মিত শসা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো জটিল ও ভয়াবহ রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন, কেননা শসাতে প্রচুর পরিমানে ফিইবারসহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে , যার ফলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি চিরো তরে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করত চান, তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন শসা খেতে পারেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে: আপনি যদি আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন। কেননা শসাতে থাকা উপাদান গুলো আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে দ্রুত সহায়তা করবে। যার ফলে অতি দ্রুত আপনার ওজন কমে যাবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: আপনি যদি বদ হজেমের মতো জটিল সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন। কেননা শসাতে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকে। যার ফলে আমাদের বদ হজমের সমস্যা দূর করে আমাদের হজম শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করে থাকে। সুতরাং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে নিয়মিত শসা খেতে পারেন।
কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করে: আপনি যদি অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টরলের সমস্যাউ ভুগে থাকেন, তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন শসা খেতে পারেন। এতে করে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
মাথা ব্যাথা দূর করে: আমাদের অনেকেরই ঘুম থেকে ওঠার পর প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করে থাকে। শরীর ম্যাজম্যাজ করে থাকে। তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন, এতে করে এসব সমস্যা দূর হয়ে যাবে সহজেই। কেননা শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার আছে।
তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক স্লাইস শসা খেয়ে নিতে পারেন, এতে করে আপনার ঘুম থেকে ওঠার পর এ সমস্যা থাকবে না। সুতরাং এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত শসা খেতে পারেন।
চোখ ভালো রাখে: নিয়মিত প্রতিদিন শসা খেলে চোখ ভালো থাকে। কেননা শসাতে প্রচুর পরিমান বিটা ক্যারোটিন থাকে , যা শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে ভিটামিনে পরিনত হয় । যার ফলে আমাদের চোখ ভালো থাকে। তাই চোখ ভালো রাখতে নিয়মিত প্রতিদিন শসা খান।
মুখের দূর গন্ধ দূর করে: নিয়মিত শসা খেলে মুখের দূর্গন্ধ দূর হয়ে যায় এবং নিঃশ্বাসে সতেজ ভাব আসে।
ত্বকে শসার উপকারিতা
আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলোর মধ্যে শসার উপকারতি গুলো সম্পর্কে জেনেছেন। তাহলে চলুন এখন জেনে নিই ত্বকের সমস্যায় শসার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-
ত্বক ভালো করে: শসা আমাদের ত্বক ভালো রাখতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। কেননা শসাতে থাকা বিভিন্ন উপাদানা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। এর জন্য প্রথমে আপনাকে শসা কেটে নিতে হবে। তারপরে ত্বকে শসার কাটা অংশ দিয়ে ত্বকে ঘোষতে হবে। এতে করে আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
সুতরাং আপনি যদি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান এবং ত্বক সতেজ, মসৃণ ও ভালো রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত শসা ত্বকে ব্যবহার করলে করতে পারেন এবং সেই সাথে শসা খেতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক সুস্থ্য, সুন্দর, মসৃণ, উজ্জ্বল ও সতেজ হবে এবং একই সাথে ত্বক আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
চুল ভালো রাখে: শসা আমাদের চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। কেননা শসাতে সিলকা ও সালফার রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে একই সাথে চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। এছাড়াও চুল সুন্দর করে। সুতরাং আপনি যদি আপনার চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন এবং চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
নক ভালো রাখে: নিয়মিত শসা খেলে নক ভালো থাকে। কেননা শসাতে প্রচুর পরিমান খনিজ সিলকা থাকে , যা আমাদের নক ভালো বা সতেজ রাখতে যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক, অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন যে, খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। যা ইতি মধ্যে আজকের আর্টিকেলের উপরের অংশে শসার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং আপনি যখনই শসা খান না কেন এর উপকারিতা পাবেন।
শসা খাওয়ার অপকারিতা
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা শিরোনামের আজকের আর্টিকেলের উপরের অংশে ইতিমধ্যে শসার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন এখন জেনে নিই শসার উপকারি দিক সম্পর্কে-
- অতিরিক্ত শসা খেলে আবার অনেক সময় হজমের সমস্যা হতে পারে, সুতরাং অতিরিক্ত শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা শসাতে অনেক পরিমান ফাইবার আছে যা পরিমান মতো খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। আবার এই ফাইবার সমৃদ্ধ শসা পরিমানের বেশি খেলে বদ হজ ও হতে পারে।
- শসাতে প্রচুর পরিমান পটাশিয়াম থাকে সুতরাং অতিরিক্ত শসা খেলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়।
- অতিরিক্ত শসা খেলে অনেক সময় ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যার আক্রান্ত হতে পারেন। এগুলোই মূলত শসা খাওয়ার অপকারিতা এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। সুতরাং অতিরিক্ত শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন।
শসা খাওয়ার সঠিক সময়
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে অনেক তথ্য জেনেছেন। তাহলে এবার জেনে নিন শসা খাওয়ার সঠিক সময় হল আপনি চাইলে খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। এছাড়াও যেকোনো সময় আপনি চাইলে এমনি শসাও খেতে পারেন। তবে রাতে শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ। কেননা রাতে শসা খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে শসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে বিস্তারিত ভাবে অনেক তথ্য জেনেছেন। এছাড়াও শসা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনেছেন। সুতরাং আপনি যদি সুস্থ্য ও সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে চান, তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন পরিমান মতো শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আরও পড়ুন: জেনে নিন পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা।
এতো দীর্ঘ সময় ধৈর্য ধারন করে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলে বর্ণিত কোনো তথ্য যদি আপনার কাছে ভুল বলে মনে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সঠিক তথ্য প্রমাণ সহ আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
আজকের আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে উপকৃত হয়ে থাকলে অনুগ্রহ পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করবেন। সেই সাথে নিত্যনতুন বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট www.kanon24.com ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;
comment url