গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় এবং এ রোগের লক্ষণ

গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে আগ্রহী হন এবং স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু মাত্র আপনার জন্য। এছাড়াও গনোরিয়া রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করব।
গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায়
সেই সাথে গনোরিয়া রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বিভিন্ন ধরেনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত তথ্য।.

গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় 

গনোরিয়া বাংলাদেশের খুবই পরিচিত একটি রোগ। এই গনোরিয়া রোগ খুবই ভয়ঙ্কর একটি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না নিলে এখান থেকে খুবই ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই রোগ থেকে বিভিন্ন যৌন রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই এরকম জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

গনোরিয়া রোগ মূলত একটি যৌনবাহিত রোগ। এই রোগে নারী এবং পরুষ উভয়েই আক্রান্ত হতে পারেন। এ রোগ মানুষের মূত্রনালী, মলদ্বার, মুখগহ্বর এবং চোখ গনোরিয়ার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষ করে এই রোগ মূলত যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। যা ধীরে ধীরে মারাক্তক আকার ধারণ করে থাকে।
গনোরিয়া রোগ হলে প্রসাবে জ্বালা পোড়া, লিঙ্গ থেকে পুজ বের হওয়া বা যৌনি থেকে অস্বাভাবিক স্রাব নির্গত হওয়া সহ বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জেনে নিবো গনোরিয়া রোগের সকল লক্ষণ এবং সেই সাথে আরও জেনে নিবো গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

গনোরিয়া খুবই জটিল ও ভয়াবহ রোগ। এ রোগে সংক্রামিত হয়ে সঠিক চিকিৎসা না নেওয়ার ফলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের যৌন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এই রোগের কোবল থেকে মুক্তির জন্য বেশ কিছু উপায় আছে, সেগুলো মেনে চললে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাহলে চলুন জেনে নিই গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির সকল উপায়-

যৌনমিলনে সাবধানতা: গনোরিয়া রোগ মূলত যৌনবাহিত একটি রোগ যা মূলত যৌন মিলনের মাধ্যমে বেশে ছড়িয়ে থাকে। সুতরাং যৌনমিলনের সময়ে যথেষ্ঠ সাবধানতা অবল্বন করতে হবে এবং সেই সাথে সকল প্রকার অনিরাপদ যৌনমিলন থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে তাহলে এ রোগে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।

অনিরাপদ যৌন মিলন: গনোরিয়া যেহেতু যৌনবাহিত একটি রোগ সেহেতু সকল প্রকার অনিরাপদ বা অবৈধ যৌনমিলন থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে এবং সেই সাথে যৌন মিলনের সময়ে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে। তাহলে এই গনোরিয়ার মতো ভয়াবহ রোগ সহজেই আক্রান্ত করতে পারবেনা।

স্বামী-স্ত্রী আক্রান্ত হলে: গনোরিয়া রোগে স্বামী-স্ত্রী দুই জনের মধ্যে কেউ একজন আক্রান্ত হলে অবশ্যই দুইজনকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবেই এই রোগ থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে এবং যৌন মিলনের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবল্বন করতে হবে দুই জনকেই। এটি গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে একটি।

বিশ্বস্থতা: যৌন মিলন করার সময় অবশ্যই স্বামী-স্ত্রী মাঝে বিশ্বস্থতা থাকতে হবে। এতে করেই কেবল এসব যৌনবাহিত ভয়ঙ্কর রোগ আক্রান্ত বা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এটিও গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপায়।

যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে কোনো একজন এই ভয়াভহ গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে অবশ্যই দুইজনার স্বাস্থ্য জনিত জটিলতা এড়াতে এই রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত যৌনমিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে অপর জন আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কম থাকবে।

পিরিওডের সময় সাবধানতা: গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত না হতে চাইলে অবশ্যই পিরিওয়ড চলাকালীন সময়ে পরিষ্কার কাপড় বা ভালো মানের প্যাড ব্যবহার করতে হবে। তাহলে এই ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন থাকা: আমরা তো সবাই জানি যে অপরিষ্কার বা অপরিচ্ছন্নতার কারনে রোগ বালাই বেশি হয়ে থাকে। তাই গনোরিয়াসহ যেকোনো রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হলে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা খুবই জরুরি।

গনোরিয়া রোগের লক্ষণ 

গনোরিয়া খুবই জটিল একটি রোগ। যা মূলত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাহলে চলুন জেনে নিই গনোরিয়া রোগের সকল লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-

গনোরিয়া রোগের আক্রান্ত হলে পুরুষদের যেসসব লক্ষণ প্রকাশিত হয় তা হল-
  • গলায় সবসময় ব্যাথা থাকে।
  • আন্ডোকোষে ব্যাথা অনুভব করা।
  • প্রস্রাবের সময় অস্বাভাবিক জ্বালা পোড়া করা ও ব্যাথা অনুভব করা।
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা।
  • লিঙ্গ থেকে হলুদ অথবা সবুজ পুঁজ নির্গত হওয়া।
  • প্রচন্ড প্রসাবের বেগ বা বর্ধিত ফ্রিকোয়েন্সি।
  • কনজেক্টিভাইটিস
  • লিঙ্গ বা লিঙ্গের মাথা ফুলে যাওয়া এবং লালচে রঙ ধারণ করা।
  • মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে এবং রক্তপাত ও হতে পারে।
  • চোখের লালচে রঙের হয়ে যাওয়া।
  • চোখ ফোলা
  • গনোরিয়া রোগের কারণে যৌনশক্তি হ্রাস হয়ে যায় ইত্যাদি।
গনোরিয়া রোগের আক্রান্ত হলে নারীদের যেসসব লক্ষণ প্রকাশিত হয় তা হল-
  • গলায় সবসময় ব্যাথা থাকে।
  • প্রস্রাবের সময় অস্বাভাবিক জ্বালা পোড়া করা ও ব্যাথা অনুভব করা।
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা।
  • পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া।
  • পিরিয়ড সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যায় আক্তান্ত হওয়া।
  • যৌন মিলনের সময়ে ব্যাথা অনুভব করা।
  • তলপেটে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব হয়ে থাকে।
  • যৌনি পথ থেকে সাদা, হলুদ কিংবা সবুজ রঙের পুঁজ নির্গত হওয়া।
  • মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে এবং রক্তপাত ও হতে পারে।
  • চোখের লালচে রঙের হয়ে যাওয়া।
  • চোখ ফোলা
  • এমনকি বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
  • আবার অনেক সময় তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশিত না ও হতে পারে ইত্যাদি।
এসব লক্ষণ গুলো দেখার সাথে সাথে সময় ক্ষেপন না করে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কেননা এটি এমন একটি জটিল ও কঠিন বা যন্ত্রণাদায়ক রোগ যার ফলে আপনি পুরুষত্বহীন বা বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারেন। সুতরাং সতর্ক থাকুন।

গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রিয় পাঠক, আপনি হইতো জানতে চাচ্ছেন যে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা সম্পর্কে। তবে বেদনাদায়ক হলেও সত্যি যে, এই ভয়াবহ গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা তেমন একটা নেই। সুতরাং আপনি যদি গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে সময় ক্ষপন না করে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তাহলে এই জটিল ও ভয়াবহ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাছাড়া এই রোগ দীর্ঘ দিন পুষে রাখলে আপনি ধীরে ধীরে পুরুষত্বহীন এবং বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারেন। সুতরাং সময় থাকতে সঠিক চিকিৎসা নিন তাহলে ইনশাল্লাহ দ্রুত সুস্থ্য হয়ে যাবেন।

গনোরিয়া হলে কি কি সমস্যা হয়

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি আজকের আর্টিকেলের উপরের অংশ ভালো মতো পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে, গনোরিয়া হলে কি কি সমস্যা হয়। সুতরাং আপনি যদি এই আর্টকেলের উপরের অংশ ভালো মতো পড়ে না থাকেন তাহলে অবশ্যই পড়ে নিবেন। এতে করে আপনি বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।

গনোরিয়া রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা 

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি এই ভয়াবহ গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কেননা এই ভয়াবহ গনোরিয়া রোগ এলোপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। তার আগে অবশ্যই এই রোগ থেকে দূরে থাকার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
যা ইতিমধ্যেই আমরা আর্টিকেলের উপরের অংশ আলোচনা করেছি। সুতরাং আপনি যদি কোনো কারণে পড়ে না থাকেন তাহলে অবশ্যই পড়ার মাধ্যমে জেনে নিবেন গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। গনোরিয়া রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা দ্রুত কাজ করে থাকে।

সুতরাং আপনি যদি গনোরিয়া রোগ আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ এলোপ্যাথিক চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং চিকিৎসক এর দেয়া ঔষধ গুলো খাওয়ার মাধ্যমে গনোরিয়া রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। তাই সময় ক্ষেপণ না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গনোরিয়া কত দিনে ভালো হয়

প্রিয় পাঠক, গনোরিয়া কত দিনে ভালো হয় সেটা সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। শুধু একটা কথায় বলতে পারি যে, আপনি যদি গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন এবং সেই পরামর্শ গুলো সঠিক ভাবে মেনে চলবেন তাহলেই দ্রুত এই ভয়াবহ রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।

গনোরিয়া রোগের ছবি 

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক ইতিমধ্যে আমাদের আর্টিক্যালটি পড়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে জেনে গেছেন যে,  গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সকল ধরনের তথ্য। সুতরাং আপনি যদি গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন এবং পরামর্শ গুলো সঠিক ভাবে মেনে চলবেন।
আজকের এই আর্টিক্যালটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করেবেন। সেই সাথে নিত্যনতুন সকল বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;

comment url