দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে আগ্রহী হন এবং স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিক্যালটি শুধু মাত্র আপনার জন্য। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে আমি আপনাকে বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করব।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যসহ বিভিন্ন ধরেনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে আজকের এই আর্টিক্যালে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত তথ্য গুলো সম্পর্কে।
ভূমিকা
বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে নিরব ঘাতক পরিচিত হল ডায়াবেটিস রোগটির। এছাড়াও বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে এ রোগটি মানব দেহে দ্রুত ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রায় প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজনের শরীরের এই রোগের উপসর্গ উপস্থিত রয়েছে। এ রোগটি বৃদ্ধির মূল কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হল রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া।
ডায়বেটিস শব্দের অর্থ হল বহুমুত্র রোগ। এ রোগ হলে একজন মানুষের শরীরে যখন যথেষ্ঠ পরিমাণ ইন্সুলিন উৎপাদন না হওয়ার কারণে রক্তে সুগারের পরিমান বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে। আর রক্ত সুগারের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। সেই সাথে দ্রুত ক্লান্তি চলে আসে, ঘন ঘন প্রস্রাব ।
আরও পড়ুন: জেনে নিন লিভার ভালো রাখার ঘরোয়া টিপস।
এছাড়াও শরীরের যেকোনো স্থানের ক্ষত সারাতে সাধরনের থেকে অনেক সময় লেগে যায়। যা খুবই অস্বস্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জন্য। এই ডায়াবেটিস রোগের নেতিবাচক দিক গুলোর মধ্যে অন্যতম হল যে, এই ডায়াবেটিস রোগে একবার আক্রান্ত হলে এই রোগ আর ভালো হয়না।
আপনি যত দিন বাঁচবেন ঠিক তত দিন এই রোগ নিয়ে বয়ে বেড়াতে হবে। সেই সাথে যদি আপনার ডায়াবেটিস বেড়ে থাকে তাহলে আপনি ধীরে ধীরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবেন। তবে আপনি যদি কিছু নিয়ম কানুন সঠিক ভাবে মেনে চলেন তাহলে অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভয়াভহ ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
অনেকেই বিভিন্ন কারনে এই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এর জন্য ভয় না পেয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এই ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ
ডায়াবেটিস রোগের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো উপলদ্ধি করার সাথে সাথে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো হলো-
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
- অস্বাভাবিক ভাবে শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া।
- ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
- দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া বা ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
- হাত পায়ে অধিক পরিমাণে ঝিনঝিন করা।
- শরীরের কোনো ক্ষত সারতে দেরি হওয়া।
- স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া।
- ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা পাওয়া।
ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ
- ডায়াবেটিস অনেক সময় বংশগত কারনেও হয়ে থাকে।
- বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকিও বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৪৫ বছরের উপরে বয়স হলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভবনা প্রবল হয়।
- অতিরিক্ত ওজনের কারনে অনেক সময় ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
- অলসতার কারনে অনেকেই এই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
- গর্ভ কালীন সময়ে অনেকেই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। সুতরাং গর্ভকালীন সময়ে বিশেষ সতর্ক থাকা জরুরি।
- এছাড়াও অনেকে জন্মগত ভাবে ডায়াবেটিস রোগটি শরীরে নিয়ে জন্ম গ্রহন করে থাকে।
- অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার জন্যেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন।
- ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ মূলত এগুলোই।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
ব্যায়াম করা: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিয়মিত প্রতিদিন এক ঘন্টা সময় ধরে ব্যায়াম করুন। এতে করে আপনার শরীরে রক্ত চলাচলের পরিমান স্বাভাবিক হবে। ফলে শরীর সুস্থ্য থাকবে। তাহলে এই ডায়াবেটিস রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
হাঁটাহাটি করা: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হইয়ে থাকেন এবং যদি অতিরিক্ত তেমন কোনো ব্যায়াম করতে না পারেন তাহলে নিয়মিত প্রতিদিন ৪৫ মিনিটের মতো জোরে জোরে একটানা হাঁটাহাঁটি করবেন তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলর মধ্যে এটি একটি অন্যতম উপায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: আমরা তো সবাই জানি যে, অতিরিক্ত ওজন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। এই অতিরিক্ত ওজনের জন্য আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ বাসা বেধে থাকে। সুতরাং আপনি যদি সুস্থ্য থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যদি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
নিয়মিত পানি পান করা: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অপবশ্যই আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পান করতে হবে। কেননা প্রচুর পরিমান পানি পান করলে প্রস্রাবের মাধ্যমে আপনার শরীরের অতিরিক্ত গ্লুকোজ বাহিরে বের করে দিবে। আর গ্লুকুজের পরিমান কমে গেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমানো: আমরা তো সবাই জানি যে অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। আর এই অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের শরীরে শর্করার পরিমান বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম উপায়।
পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম: ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের খুবই উপকারি। প্রতিদিন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রায় ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিৎ। এর কম ঘুমালে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম না হলে আমাদের রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যায়। যার ফলে ডায়াবেটিস ও বেড়ে যায়। সুতরাং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমাতে হবে।
খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে খাবার সম্পর্কে বিশেষ ভাবে সচেতন থাকতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আপনি চাইলে প্রতিদিনের খাবার তালিকা তৈরি করতে পারেন। যা আপনাকে খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকতে সাহায্য করবে।
বাহিরের খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অবশ্যই আপনাকে বাহিরের সকল প্রকার মুখরোচক খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে আপনি আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন না। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
নিয়মিত খাবার খাওয়া: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিন সময়ে খাবার সময়ে খেতে হবে। তা না হলে অনেক সময় ডায়াবেটিস কমে যেতে পারে, এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি একটি উপায়।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনাকে খাবারের ব্যাপারে বিশেষ ভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তা না হলে হূট করেই আপনার ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে বা কমে যেতেও পারে। সুতরাং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম মাফিক খাবার খেতে হবে।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে মেথি পানি পান করতে পারেন। এতে করে আপনার আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেই সাথে সামান্য কালোজিরা খেতে পারেন। কেননা কালোজিরাকে সকল রোগের মহাঔষধ বলা হয়। এরপরে সকালে নাস্তার সময়ে দুইটা রুটি এবং সাথে সবজি ও ডিম খেতে পারেন। এরপর আপনি চাইলে চিনি ছাড়া এককাপ চা পান করতে পারেন।
- আপনার যদি খুবই সকালে নাস্তার অভ্যাস থাকে অর্থাৎ সকাল ৮ টার মধ্যে সকালের নাস্তা খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বেলা ১১ টার দিকে হালকা নাস্তা এবং ফল খেতে পারেন। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস হূট করে একেবারে কমে যাবেনা।
- মধ্যহ্নভোজ বা দুপুরের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন ১-২ টার মধ্যে। দুপুরে খাবারে এক বাঁটি পরিমান ভাতে সাথে সবজি পরিমান মতো মাছ, মাংস বা ডাল, সালাদ খেতে পারেন।
- বিকাল ৪ টার দিকে আপনি চাইলে চিনিমুক্ত বিস্কুট জাতীয় খাবার খেতে পারেন। সেই সাথে আপনি চাইলে চিনি ছাড়া এক কাপ চা পান করতে পারেন।
- সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আপনি চাইলে হাফ বাটি পরিমান স্যুপ বা অন্য কোনো হালকা খাবার খেতে পারেন। এর আপনি চাইলে চিনি ছাড়া আরও এক কাপ চা পান করতে পারেন।
- রাত ৮-৯ টার মধ্যে অবশ্যই চেষ্টা করবেন রাতের খাবার খেয়ে ফেলার। রাতে খাবারের ২-৩ টি রুটির বা একবাটি পরিমান ভাত সাথে সবুজ সবজি , সালাদ ও ডাল খেতে পারেন।আপনি চাইলে ঘুমানোর আগে হাফ কাপ পরিমান চিনি ছাড়া ফ্যাক্ট মুক্ত দুধ পান করতে পারেন।
- এছাড়াও আপনি চাইলে বিশেষ কিছু খাবার ছাড়া যেকোনো খাবার পরিমান মতো খেতে পারেন।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কেননা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। পুষ্টির ধীর শোষণ বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে যথেষ্ঠ সহায়তা করে থাকে।
প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত পরিমান মতো প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার হলো- মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি। তবে খাদ্য তালিকা থেকে লাল ধরনের মাংস খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। যেমন- গরুর মাংস, খাসির মাংস, ভেড়ার মাংস ইত্যাদি।
এই প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার গুলো আপনার শরীরের পেশিগুলোকে সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করে থাকে। সেই সাথে মাছের তেল আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতেও যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সবুজ শাক-সবজি: ডায়াবেটিস রুগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারি খাবার গুলোর মধ্যে হল এই শাক-সবজি। নিয়মিত শাক-সবজি খেলে রক্তে শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। ফলে ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রনে থাকে।
ফলমূল: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য আপনি চাইলে নিয়মিত প্রতিদিন পরিমান মতো সতেজ বা টাটকা ফল খেতে পারেন। যা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ফল
আপনি যদি ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত প্রতিদিন পরিমান মতো ফল খেতে হবে। তবে মিষ্টি ফল না খাওয়াই ভালো। এর জন্য আপনি চাইলে টক জাতীয় ফল বেশি বেশি খেতে পারেন।
- আমলকি
- আঙুর
- কমলা
- আপেল সবুজ হলে ভালো হয়
- নাশপাতি
- আমড়া
- কামারাঙ্গা
- কলা
- বেরি ফল
- পেঁপে
- জাম্বুরা
- লেবু
- চেরি
- বরই
- কিউই
- তরমুজ
- মাল্টা
- এপ্রিকোট
- এছাড়াও টক জাতীয় যেকোনো ফল খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সবজি
আপনি যদি ডায়াবেটিসে রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রচুর পরিমানে শাক-সবজি খেতে হবে। তবে মাটির নিয়ে উৎপাদিত সকল প্রকার সবজি এড়িয়ে চলায় উচিৎ। যেমন- আলু, কচু ইত্যাদি। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সবজি গুলো হলো-- পালং শাক
- কলমি শাক
- কচু শাক
- পুই শাক
- থানকুনির পাতা
- সকল প্রকার সবুজ শাক।
- বেগুন
- পটল
- কুমড়া
- লাউ/কদু
- ঢেঁড়স
- টমেটো
- বাঁধা কপি
- ফুল কপি
- ব্রকলি
- মাশরুম
- শসা
- কাঁচা পেঁপে
- করলা
- ঝিঙা
- চিচিঙা
- চাল কুমড়া
- সজিনা
- ধুন্দল
- ক্যাপসিকাপ
- মটর শুটি ডাল
- মসুর ডাল
- ছোলা ইত্যাদি।
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে বেশ কিছু খাবার খাওয়া থেকে আপনাকে একেবারেই বিরত থাকতে হবে। তা না হলে আপনার ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-
চিনি: চিনিকে বলা হয় সাদা বিষ। আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যদিও খুবই কষ্টকর তারপরেও চেষ্টা করতে হবে। তবে একেবারে যদি চিনি খাওয়া না ছাড়তে পারেন তাহলে চিনির বিকল্প হিসেবে জিরো ট্যাবলেট সহ বেশ কিছু দ্রব্য বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো খেতে পারেন।
লবণ: কাঁচা লবণ ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য চরম ক্ষতিকর। আপনি প্রতিদিন যে পরিমান সবজি, ফলমূল খেয়ে থাকেন সেগুলো থেকে যথেষ্ঠ পরিমান লবণ গ্রহণ করে থাকেন। সুতরাং মুখের স্বাদে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই ছেড়ে দিন। ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা গুলোর মধ্যে এটি একটি।
চর্বি জাতীয় খাবার: চর্বি জাতীয় খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আর ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হলে তো আর কথায় নেই। সুতরাং তেলে ভাজা খাবার সহ সকল প্রকার চর্বি জাতীয় খাবার আজই ত্যাগ করুন। তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভন হবে।
দুদ্ধ জাত খাবার: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই দুদ্ধজাত খাবার থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। তবে আপনি চাইলে চর্বি মুক্ত দুধ সামান্য পরিমানে খেতে পারেন।
আমিষজাতীয় খাবার: আমিষজাতীয় খাবার ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে চাইলে অবশ্যই আমিষ জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে লাল মাংস থেকে।
চা বা কফি: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে দুই থেকে তিন কাপের বেশি চা বা কফি পান থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে চা বা কফি পান করার ক্ষেত্রে চিনি ব্যবহার করা যাবেনা। অর্থাৎ চিনি ছাড়া চা বা কফি পান করতে হবে।
এছাড়াও চকলেট ফলের ফুস পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে আপনি চাইলে মাঝে মধ্যে সামান্য পরিমানে খেতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জেনেছেন। এছাড়াও ডায়াবেটিস রুগীর খাবারের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। সুতরাং আপনি যদি ডায়াবেটি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই উপরে বর্ণিত নিয়ম গুলো মেনে চলুন।
আরও পড়ুন: জেনে নিন যৌবন ধরে রাখতে মধুর উপকারিতা।
আজকের এই আর্টিক্যালটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করেবেন। সেই সাথে নিত্যনতুন সকল বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;
comment url