এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে জেনে নিন
এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এবং এইচআইভি পজিটিভ লক্ষণ এ সম্পর্কে যদি আপনি জানতে আগ্রহী হন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধু মাত্র আপনার জন্য।
সেই সাথে এইচ আইভি ভাইরাসের সংক্রামণের সকল বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত সকল তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে চলুন জেনে নিই আজকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।.
এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে
এইডস (AIDS) হল একটি মারাক্ত প্রাণ ঘাতি ভাইরাস। এই এইডস এর পূর্ণ রূপ হল 'অ্যাকুয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিন্ড্রোম। সেই সাথে এই রোগ এই আই ভি (HIV) পজেটিভ। এই এইচ আইভি ভাইরাস বিশেষ করে মানব দেহের শ্বেত রক্ত কণিকাকে আক্রমণ করে থাকে যার ফলে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল করে দেয়।
সেই সাথে শরীরে খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস, ইনফেকশন ক্যান্সারসহ ইত্যাদি রোগ হওইয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। এই ভাইরাস বিভিন্ন মাধ্যমে খুবই দ্রুত ছড়িয়ে থাকে। এই এইচ আইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ইতিমধ্যে বহু মানুষ মারা গিয়েছে। সেই সাথে এই ভাইরাসে সারা বিশ্বে প্রায় ২৫ লক্ষের ও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে আছে।
আজকের আর্টকেলের মাধ্যমে আমরা এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এবং সেই সাথে এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া উপয়া গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে সকল তথ্য আলোচনা করেছি।
এইডস রোগে লক্ষণ কতদিন পরে লক্ষণীয় হই এই বিষয়ে অবশ্যই আমাদের সঠিক ভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন। তাহলে এই রোগ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন হওয়া সম্ভব। এইচ আইভি ভাইরাসের মাধ্যমেই মূলত এইডস রোগ হয়ে থাকে। কিন্তু এইচ আইভি শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে অন্যান্য রোগের মতো লক্ষণ প্রকাশ করে না।
এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয় অনেক দেরিতে। যার ফলে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে এই রোগ থেকে নিস্তার পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কেননা এইচ আইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশের অনেক দিন বা বছরে পরে এই রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন সাধারণত এই এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে প্রায় ৮-১০ মাস এর মতো সময় লাগে।
তবে অনেকের ক্ষেত্রে কম বেশিও হতে পারে। কিন্তু এই রোগ প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এতে করে একটা সম্ভবনা থাকে। তবে তবে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে এইচআইভি আক্রমণের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যে মাথায় এবং গলায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
তবে এই সমস্যা পরবর্তীতে ভালোও হয়ে যায়। এছাড়াও অনেক সময় এইচ আইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রাকাশ পেয়ে থাকে। সেই জন্য রকম লক্ষণ বুঝতে পারলে সাথে সাথে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ফুসফুস ভালো রাখার উপায়।
সেই সাথে যেসবের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছগড়িয়ে থাকে সেসব কার্যকালাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। তাহলে এই রোগের সংক্রামণ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে।
এইচআইভি পজিটিভ লক্ষণ
এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এই সম্পর্কে জানার পূর্বে এইচআইভি পজিটিভের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। এইচ আইভি পজিটিভের লক্ষণ গুলো হল-
- সবসময় ক্লান্ত অনুভব হওয়া।
- দীর্ঘদিন ধরে বা অবিরত জ্বর।
- প্রচন্ড মাথা ব্যথা।
- শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
- বমি বমি ভাব।
- বমি হওয়া।
- ওজন হ্রাস পাওয়া।
- গলা শুকিয়ে যাওয়া।
- ডায়রিয়া।
- ঠাণ্ডা লাগা।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।
- ত্বকের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি বের হওয়া।
- নিউমোনিয়া।
- দাদ বা দাউদের সংক্রামণ।
- রাতে ঘাম হওয়া ইত্যাদি।
এইডস কিভাবে হয়
এইডস রোগ সম্পর্কে আমরা প্রায় সকলেই মোটামুটি ভাবে ধারণা রাখি। কিন্তু বিস্তারিত ভাবে এই রোগ সম্পর্কে অনেকেই সঠিক তথ্য ভালোভাবে জানিনা। এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এই বিষয়ে জানার পূর্বে অবশ্যই আমাদের জানতে হবে এই এইচ আইভি বা এইডস কিভাবে হয়।
এইডস রোগ হওয়ার কারণ
এইডস হল একটি ভাইরাস সংক্রামিত রোগ। এটি মূলত এইচ আইভি ভাইরাসের সংক্রামণ থেকে হয়ে থাকে। প্রতিনিয়তই আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বিভিন্ন ভাবে প্রবেশ করে করে থাকে কিন্তু এই এইচ আইভি ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম কারণ হল অনৈতিকভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার মাধ্যমে।
কেননা কেউ যদি অনৈতিক ভাবে কারও সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় এবং সেই যৌন সঙ্গী যদি এইচ আইভি ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে থাকে তাহলে সেও খুবই দ্রুত এই ভাইরাসে সংক্রামিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে এই ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে থাকে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল-
- অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার মধ্যমে এইচ আইভি ভাইরাস দ্রুত সংক্রামিত হয়ে থাকে।
- রক্তের মাধ্যমে অথবা এইচ আইভি ভাইরাসে সংক্রামিত কোনো ব্যক্তির রক্ত অন্য কোনো সুস্থ্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করালে দ্রুত এই ভাইরাসের সংক্রামণ বৃদ্ধি পায়।
- ইনজেকশনের মাধ্যমে অর্থাৎ এইচ আইভি ভাইরাসে সংক্রামিত কোনো ব্যক্তির দেহে ব্যবহৃত সুচ অন্য কোনো সুস্থ্য ব্যক্তির শরীরে ব্যবহার করলে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে থাকে।
- সার্জিকেল ইন্সট্রুমেন্টের মাধ্যমেও এই রোগের সংক্রামণ ছড়িতে থাকে।
- এইচ আইভি ভাইরাসে আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করার মাধ্যমে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে থাকে।
- মূলত এগুলোই
- এইডস রোগ হওয়ার কারণ তবে এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে এই রোগের সংক্রামণ ছড়িয়ে থাকে। তাই এসব কার্যকালাপ থেকে নিজেকে সব সময় বিরত রাখতে হবে।
এইডস রোগী কতদিন বাঁচে
এইডস একটি মারাক্ত মরণব্যাধি একটি রোগ। এই রোগ হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আর এই এইডস রোগ হলে বাঁচার সম্ভাবনাও থাকেনা। কেননা এই রোগের লক্ষণ গুলো সাধারণ অনেক দেরিতে প্রকাশ পায়। তত দিনে এই রোগ মানব দেহে শক্তিশালী অবস্থানে চলে যায়।
তাই এই রোগের মারাক্ত আকার ধারন করার আগে সঠিক চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।সুতরাং আপনার শরীরের উপরে বর্ণিত প্রাথমিক কোনো লক্ষণ থেকে থাকলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন লিভার ভালো রাখার উপায়।
সেই সাথে যেসব কারনেই এই ভাইরাসের সংক্রামণ ছড়িয়ে থাকে সেই সমস্ত কার্যকালাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে বুঝতেই পারছেন এইডস রোগী কতদিন বাঁচে।
এইডস হলে করনীয়
এইডস হলে করনীয় হল এইডস হলে প্রথমত একজন ভালো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। সেই সাথে সব ধরনের বৈধ ও অবৈধ যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে হবে এবং যেসব কারনে এই রোগ হয়ে থাকে সেসব কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে এগুলোর পাশাপাশি সৃষ্টি কর্তার কাছে এই রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে ও এই রোগ কেন হয় বা এই রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সকল ধরণের তথ্য বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং উপরে বর্ণিত কোনো একটি লক্ষণ যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
এই আর্টিক্যালটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে আপনার পরিচিতদের নিকট অনুগ্রহ করে শেয়ার করে দিবেন। সেই সাথে তারাও আপনার মতো উপকৃত হতে পারবে। এতো কষ্ট ,ধৈর্য ও আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিক্যালটি সম্পূর্ণভাবে পড়ার জন্য এবং শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
আর আপনি যদি সকল বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ww.kanon24.com নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;
comment url