বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায়
বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে আগ্রহী হন, তাহলে আজকের আর্টিক্যালটি শুধু মাত্র আপনার জন্য। এছাড়াও বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করব।
সেই সাথে বিট কয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত বিভিন্ন ধরেনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিক্যালে। সুতরাং সময় ক্ষেপন না করে চলুন জেনে নেই বিস্তারিত তথ্য।
ভূমিকা
বর্তমান পৃথিবী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বদলে গেছে অনেক দূর। যা আমরা এখন থেকে ১০-২০ বছর আগেও অনেকে চিন্তা করতে পারিনি তা বর্তমানে বাস্তবতায় রূপান্তরিত হয়েছে। যা একেবারে অকল্পনীয় পরিবর্তন।
এই প্রযুক্তির উন্নতির ধারাবাহিকতায় উদ্ভোব হয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি নামক এক মুদ্রা বা অর্থ ব্যবস্থার। যা কোনো প্রকার স্পর্শ ছাড়ায় আমাদের সকল প্রকার অর্থনৈতিক লেন দেন করতে সক্ষম। যা আমাদের সাধারন মানুষদের ভাবিয়ে তুলে প্রতিটি মুহূর্তে।
বিট কয়েন হল এক প্রকার ক্রিপ্টকারেন্সি অথবা ডিজিটাল মুদ্রা। অনেক আবার একে ডিজিটাল গোল্ড বা সোনা বলে থাকে। এই বিট কয়েন ডেটা ব্লক সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করে থাকে। বিট কয়েন মূলত সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দামী ক্রিপ্টোকারেন্সি। তাহলে চলুন জেনে নিই বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় সম্পর্কে।
বিটকয়েন কি
বিটকয়েন বলতে সাধারনত একপ্রকার ডিজিটাল মানি বা ক্রিপ্টোকারেন্সি। যার মাধ্যমে সকল প্রকার অর্থনৈতিক নেল দেন কোনো প্রকার ব্যাংকিং সিস্টেম ছাড়াই এবং কোনো রকম স্পর্শ ছাড়াই করা সম্ভব।
ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রযুক্তি মূলত দুই ভাবে কাজ করে থাকে একটি হল ব্লকচেইন প্রযক্তি অপরটি হল ক্রিপ্টোগ্রাফি প্রযুক্তি। বিট কয়েন মূলত ব্লক চেইন পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে।
তবে মজার ব্যাপার হল বিট কয়েনের উপর কোনো দেশের সরকার বা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নেই। এটি তার নিজেস্ব সিস্টেমে কাজ করে থাকে। এমনি বিট কয়েনের জাল বা নকল করাও সম্ভব নয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন বিট কয়েন কি।
বিটকয়েন এর জনক কে
বিট কয়েন সবচেয়ে মূল্যবান ও জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা। এটি ২০০৯ সালের দিকে সাতোশি নাকামোতোর হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করেছিল। এই বিট কয়েন আত্মপ্রকাশের পর থেকেই দিন দিন এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার এই যে বিটকয়েনের জনক সাতোশি নাকামোতোর এর নাম ছাড়া আর অন্য কোনো পরিচয় এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে বর্তমান অবস্থান পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায় যে আগামীতে বিট কয়েন একটি সম্ভবনা।
কেননা ডিজিটাল মুদ্রার মাধ্যমে অর্থনৈতিক নেল দেন করতে কোনো প্রকার ঝামেলায় পড়তে হইনা। এটি মুহূর্তের মধ্যেই লেন দেন সম্পূর্ণ করে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন বিটকয়েন এর জনক কে।
১ বিটকয়েন সমান কত টাকা
বিট কয়েন আত্মপ্রকাশের পর থেকে এটি বেশ আলোচনা শীর্ষে রয়েছে। এজন্য আমাদের মনে নানা রকম প্রশ্ন জাগে ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা সম্পর্কে। তবে এর মূল্য অনেক সময় উঠা নামা করে থাকে।
১ বিট কয়েন সমান ৫,৬৯৪,৯২৭.০২ টাকা।
বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম
চারিদিকে বিট কয়েন নিয়ে আলোচনার কারনে আমরা অনেকেই জানতে চাই বিট কয়েন সম্পর্কে নানা রকম তথ্য। সেই তথ্যের ধারাবাহিকতায় আজকের আর্টিক্যালের মাধ্যমে আপনাকে জানাবো বিট কয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সকল তথ্য-
- বিট কয়েন একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে যেতে হবে।
- তারপর টাইপ করুন কয়েনবেস (Coinbase.com) ডট কম এবং কয়েনবেস ডট কমের ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন।
- এরপর Get Stared/ Sing up এ ক্লিক করুন।
- ক্লিক করা হয়ে গেলে আপনি একটি ফর্ম দেখতে পাবেন। এখন সেই ফর্মটি ভালো ভাবে পূরণ করুন।
- ফর্ম পূরণ করা হয়ে হয়ে গেলে এবার Create Account অফশানে ক্লিক করুন।
- এর পর আপনার ই-মেইলে একটি নটিফেকেশন আসবে, সেখান থেকে আপনার একাউন্টটিকে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া হবে।
- এবং আপনার একটি সচল মোবাই্ল নাম্বার ও প্রয়োজন হবে।
- এরপর কয়েন বেস থেকে কোনো প্রকার তথ্য চাইলে সেগুলো দিয়ে দিন।
- এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করলে আপনি বিট কয়েনের জন্য একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায়
২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতোর হাত ধরে বিট কয়েন আত্মপ্রকাশ করে তখন থেকে এটি নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।সেই সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যবান হল এই বিটকয়েন।
আর এই ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনো প্রকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা কোনো রাষ্ট্র বা কোনো দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কাজ করে।
আর এই মূল্যবান ডিজিটাল মূদ্রা থেকে ইনকামের উপায় থাকবেনা সেটা কি হতে পারে। অবশ্যই বিট কয়েন থেকে উপার্জন করা যায়। আজকের আর্টিক্যালের মাধ্যমে আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনে নিবো বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো।
বিট কয়েন উপার্জন করার বেশ কিছু উপায় আছে তবে এই উপায় গুলোর বেশির ভাগই ঝুকিপূর্ণ ও ব্যায়বহুল।তবে আপনি যদি চান অল্প পরিমাণ বিনোয়গের মাধ্যমে বিট কয়েন উপার্জন করতে চাইলে বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করে থাকে এমন অনলাইন ভিত্তিক রিওয়ার্ড সাইট বা বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: জেন নিন মোবাইল দিয়ে রেজাল্ট দেখার নিয়ম।
তবে এই প্রক্রিয়ায় বিটকয়েন উপার্জন করা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সুতরাং আপনি যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিট কয়েন উপার্জন করতে চান তাহলে অনেকগুলো বিট কয়েন উপার্জনের সাইট ও অ্যাপ রয়েছে। আপনি চাইলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
তাহলে চলুন জেনে নিই বিট কয়েন উপার্জন করার সেরা কিছু অ্যাপ সম্পর্কে-
- ক্রিপ্টোট্যাব
- ব্লকচেইন গেম
- লনমাওয়ার
- সোয়েটকয়েন
- ক্রিপ্টো ডট কম ইত্যাদি।
এগুলো ছাড়াও ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েন থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়। তাহলে চলুন জেনে নিই বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় গুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য-
ট্রেডিং: ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা বিট কয়েন আয় করার সবচেয়ে বড় উপায় বা মাধ্যম হল ট্রেডিং । এই ট্রেডিং সিস্টেমে অংগ্রহনের জন্য অবশ্যই আপনাকে আর্থিক বাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অংশ গ্রহণ করে এই বিট কয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় বিক্রয় করতে হবে ।
আরও পড়ুন: AI এআই দিয়ে টাকা ইনিকামের উপায়।
এই জন্য বাজার সম্পর্কে আপনাকে যথেষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সেই সাথে বাজার সব সময় পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কেননা আমাদের আর্থিক বাজার সবসময় দ্রুত উঠা নামা করে। সুতরাং আপনি যদি বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা থেকে আয় করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ও আর্থিক বাজার সম্পর্কে প্রচুর পরিমান জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন চ্যাটজিপিট থেকে ইনকামের উপায়।
তাছাড়া লসের অনেক সম্ভাবনা থাকে।বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় এর সবচেয়ে কার্যকারী ও অন্যতম একটি উপায় হল ট্রেডিং।
স্থায়ী বিনিয়োগ: বিট কয়েন উপার্জন করতে চাইলে আপনি স্থায়ীভাবে বিনিয়োগ করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় করে রেখে দিতে হবে দীর্ঘ দিনের জন্য এবং এর বাজার দর যখন বেড়ে যাবে তখন বিক্রি করে দিতে পারেন।
মাইনিং সিস্টেমে: বিট কয়েন উপার্জনের আরো একটি অন্যতম উপায় হল মাইনিং সিস্টেম। এর জন্য আপনাকে বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো ট্রানজেকশন সমাধানের জন্য কম্পিউটার রিসোর্স প্রদান করতে পারেন। এর মাধ্যমে সহজেই বিট কয়েন উপার্জন করতে পারেন।
বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং: বিট কয়েন ডিজিটাল মুদ্রা আয়ের অন্যতম একটি উপায় হল বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং সিস্টেম। এর জন্য আপনাকে কিছু প্রজেক্ট বিট কয়েন ডিজটাল মুদ্রার মাধ্যমে তাদের কিছু পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে হবে এর মাধ্যমে আপনি বিট কয়েন আয় করতে পারবেন।
এ ছাড়া অনেক গুলো উপায়ে বিট কয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা আয় করা যায়। তবে উপরে বর্ণিত পদ্ধতি গুলো বেশি জনপ্রিয়। সুতরাং আপনিও বিট কয়েন উপার্জন করতে চাইলে উপরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে বিট কয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি উপার্জন করতে পারেন।
বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ
বাংলাদেশে যেকোনো প্রকার ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার সম্পূর্ণভাবেই অবৈধ একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অথবা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় বিক্রয়, এমন কি নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখাও সম্পূর্ণ ভাবে অবৈধ বা নিষিদ্ধ। তাহলে বুঝতেই পারছেন বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ নাকি অবৈধ।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিক্যাল সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে বিট কয়েন থেকে টাকা ইনকামের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে সকল তথ্য পরিপূর্ণ ভাবে জানতে পেরেছেন। সুতরাং আপনি যদি বিট কয়েন আয় করতে চান তাহলে উপরে বর্ণিত নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
তবে বাংলাদেশে যেহেতু এটার এখনো কোনো অনুমতি নেই অর্থাৎ বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যেহেতু নিষিদ্ধ, সেহেতু কোনো প্রকার ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় বিক্রয় বা নিজের কাছে সরক্ষণ না করাই ভালো।
আজকের এই আর্টিক্যালটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ করে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করেবেন। সেই সাথে নিত্যনতুন সকল বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
কানন২৪ এর নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন।প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দেওয়া হয়;
comment url